Breaking News
Home / আসুন পাশে দাঁড়াই / ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের রক্ষাকবচের’ ব্যাপারে প্রস্তাব দেবে বিএনপি

‘সুষ্ঠু নির্বাচনের রক্ষাকবচের’ ব্যাপারে প্রস্তাব দেবে বিএনপি

আগামী ১৫ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে যেসব ‘রক্ষাকবচ’ প্রয়োজন, সে ব্যাপারে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব দেবে বিএনপি। ইসির সংলাপে যেসব প্রস্তাব তুলে ধরা হবে তা সম্প্রতি দলের সিনিয়র নেতাদের এক বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গেল বছরের নভেম্বরে ইসি পুনর্গঠনসহ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে যে ১৩ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেছিলেন, তার আলোকেই আরেকটি নতুন প্রস্তাব তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার কাছে পাঠিয়ে এই নতুন প্রস্তাবের ব্যাপারে অনুমোদন নেয়া হবে বলে জানা গেছে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে শুক্রবার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাবেক সচিব ইসমাঈল জবিউল্লাহসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমাদের সংলাপের বিষয় নিয়ে মূল আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া সহায়ক সরকার, রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি ও চলমান রাজনীতির কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে।

তবে দলের একটি সূত্র মতে, গত বছরের নভেম্বর মাসে খালেদা জিয়া ইসি পুনর্গঠন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সংক্রান্ত যেসব প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, তার আলোকে ইতিমধ্যেই একটি খসড়া নতুন প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। সেখানে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ইসিকে সহায়তা করতে ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ দাবি রয়েছে। দলটি সংলাপে ইসির কাছে এই দাবিটি তুলবে বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে তারা নির্বাচনের সময় বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব করেছে। এ ছাড়া দলীয় মনোভাবাপন্ন নির্বাচনী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাদের অপসারণ, নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার পর থেকে নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ পর্যন্ত সরকারের স্বরাষ্ট্র, অর্থ, তথ্য, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা, পররাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখা, সুপারিশ রয়েছে বিএনপির এই প্রস্তাবনায়।

এ ছাড়া ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নতুন ভোটার তালিকা নিবন্ধীকরণ যোগ্য সব নাগরিক, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, কারাবন্দি ও নানা মামলায় যুক্ত ব্যক্তিদের নেতাকর্মীদের ভোটার করার বিষয়ে এই প্রস্তাবে সুপারিশ রয়েছে। বিএনপি ইসির সংলাপে দেশ-বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগের বিষয়েও সুপারিশ করবে। এতে বলা হয়েছে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার ন্যূনতম তিন বছরের পূর্বে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থাকে দেশের প্রচলিত আইন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারা নিবন্ধিত হতে হবে। রাজনৈতিক দলের প্রকাশ্যে আনুগত্যপোষণকারী কোনো প্রতিষ্ঠানকে পর্যবেক্ষক করা যাবে না।

প্রস্তাবে রয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর মাঠ প্রশাসনে বদলির এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। বিগত পাঁচ বছরে যে যে কর্মকর্তা জেলা ও উপজেলায় কাজ করেছেন তাদের নতুন এলাকায় বদলি করতে হবে। নির্বাচন কমিশন একটি কমিটি গঠন করবে, যারা ২০০৮ ও ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছে সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করতে পারবে।

প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী কিংবা দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারী ব্যক্তি নির্বাচন পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না- এমন একটি সুপারিশ থাকতে পারে। এ ছাড়া নির্বাচনী আইন ভঙ্গের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, নির্বাচন কমিশন পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ প্রদান করবে, প্রতিরক্ষাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাদের বিচারিক ক্ষমতা দিতে হবে, ভোটগ্রহণের সময় ব্যালট বাক্স পরিপূর্ণ হয়ে গেলে তা পোলিং বুথেই রাখতে হবে। ভোট গ্রহণের পর খালি ব্যালট বাক্স যদি থাকে তা নিরাপদে রাখতে হবে।

এ ছাড়া বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে অধিকতর শক্তিশালীকরণের জন্য বিভিন্ন প্রস্তাব ওই সংলাপে উত্থাপন করবে বলে জানা গেছে।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে অপারগতা প্রকাশ করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ইসির সংলাপে কোন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব, তা আগে বলার কিছু নেই। চেয়ারপার্সন লন্ডনে আছেন। আমরা কিছু চিন্তাভাবনা করেছি, সেটা তাকে পাঠাব। তারপর তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।

উল্লেখ্য, আগামী ১৫ অক্টোবর বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর আগামী ১৮ অক্টোবর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি। আর সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে ইসির সংলাপ হবে ৯ অক্টোবর।

তথ্য কণিকা তৌফিক আহমেদ বিপ্লব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>

Scroll To Top